অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১: মামা কেন শম্ভুনাথ বাবুকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে যান?
উত্তর: মামা শম্ভুনাথ বাবুকে যৌতুকের গহনা যাচাই করে দেখার কথা বলতে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে গেলেন। মামা হলো চতুর প্রকৃতির লোক। তাঁর জীবনের লক্ষ্য হলো জীবনে কারো কাছে ঠকবেন না। শম্ভুনাথ সেন গহনা কম দিয়ে বা খাদযুক্ত গহনা দিয়ে তাঁকে ঠকাতে পারেন। এরূপ ভাবনা থেকেই তিনি গহনাগুলো যাচাই করে দেখতে চান। আর এজন্যই শম্ভুনাথ বাবুকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে যান।

প্রশ্ন-২: শম্ভুনাথ বাবু কেন অনুপমকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে গেলেন?
উত্তর: যৌতুকের গহনা যাচাইয়ের বিষয়ে অনুপমের মতামত জিজ্ঞেস করার জন্য শম্ভুনাথ বাবু তাকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে গেলেন। শম্ভুনাথ বাবু ছিলেন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ । তাই মামা গহনা যাচাইয়ের কথা বললে তিনি খুব কষ্ট পান। তিনি ভেবেছিলেন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত অনুপমও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ এবং সে গহনা যাচাইয়ের ব্যাপারে নেতিবাচক মতামত পোষণ করবে। এমন ধারণা থেকেই শম্ভুনাথ তাকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে গেলেন।

প্রশ্ন-৩: মামা কেন বিয়ের কাজ শুরু হবার আগেই কনের সব গহনা যাচাই করতে দেখতে চাইলেন?
উত্তর: মেয়ের বাবা গহনাতে ফাঁকি দিতে পারেন এমন আশঙ্কায় মামা বিয়ের কাজ শুরু হবার আগেই সব গহনা যাচাই করে দেখতে চাইলেন। মামার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য তিনি কারো কাছে ঠকবেন না ৷ তাঁর ভয় ছিল তাঁর বেহাই তাঁকে গহনায় ফাঁকি দিতে পারেন । আর বিয়ের কাজ শেষ হয়ে গেলে ফাঁকির প্রতিকার সম্ভব নয়। তাই বিয়ের কাজ শুরু হবার আগেই মামা কনের সব গহনা যাচাই করে দেখতে চাইলেন।

প্রশ্ন-৪: হরিশ কীভাবে অনুপমের মন উতলা করে দিল?
উত্তর: একটি সুন্দর মেয়ের সন্ধান দিয়ে হরিশ অনুপমের মন উতলা করে দিল। হরিশ কানপুরে কাজ করে। ছুটিতে সে কলকাতা এসেছে। এদিকে অনুপমেরও পড়ালেখা শেষ। তার তেমন কোনো কাজ নেই। এমন অবকাশের সময় হরিশ একটি সুন্দর মেয়ের সন্ধান দিয়ে অনুপমের মন উতলা করে দিল।

প্রশ্ন-৫: মামার মন কীভাবে নরম হয়েছিল?
উত্তর: হরিশের সরস রসনার গুণে মামার মন নরম হয়েছিল। অনুপমের পরিবারের সর্বময় কর্তা ছিলেন মামা। তাই অনুপমের বিয়ের ব্যাপারে মামার মতামত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর মামাকে রাজি করানোর দায়িত্ব ছিল রসিক হরিশের উপর। আর হরিশের সরস রসনার গুণে সহজেই মামার মন নরম হয়েছিল।

প্রশ্ন-৬: অনুপমের বিয়ের ভূমিকা অংশটি নির্বিঘ্নে সমাধান হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: হরিশের চেষ্টায় মামার মন নরম হওয়াতে অনুপমের বিয়ের ভূমিকা অংশটি নির্বিঘ্নে সমাধান হয়েছিল। অনুপমের বন্ধু হরিশ ছিল রসিক প্রকৃতির। আর এ জন্যই মামা তাঁকে পছন্দ করতেন। আর অনুপমের বিয়ের ব্যাপারে মামাকে রাজি করানোর দায়িত্ব ছিল হরিশের উপর। হরিশের সরস রসনার গুণে মামার মন নরম হয়েছিল। আর এ কারণেই অনুপমের বিয়ের ভূমিকা অংশটা-নির্বিঘ্নে সমাধান হয়েছিল।

প্রশ্ন-৭: শম্ভুনাথ সেন পশ্চিমে গিয়ে বাস করছেন কেন?
উত্তর: দেশের মধ্যে বংশমর্যাদা বজায় রেখে চলা সহজ নয় বলে শম্ভুনাথ সেন পশ্চিমে গিয়ে বাস করছেন। এককালে শম্ভুনাথ সেনদের বংশে লক্ষ্মীর মঙ্গলঘট ভরা ছিল। টাকা-পয়সার কোনো অভাব ছিল না তাদের। কিন্তু বর্তমানে তেমন কিছু নেই বললেই চলে। আর সামান্য যা বাকি আছে তা দিয়ে বংশমর্যাদা রেখে চলা সহজ নয় বলে তিনি পশ্চিমে চলে গিয়েছেন।

প্রশ্ন-৮: মামা কেন হরিশকে পেলে ছাড়তে চান না?
উত্তর: আসর জমাতে অদ্বিতীয় হওয়ার কারণে মামা হরিশ পেলে ছাড়তে চান না। হরিশকে সবাই খুব খাতির করে। কেননা তার সরস রসনার গুণ, অর্থাৎ সরস বাভঙ্গি সবাইকে মুগ্ধ করে দেয়। মামাও এজন্য তাকে খুব খাতির করেন। মূলত তার আসর জমানোর গুণের কারণেই মামা তাকে পেলে ছাড়তে চান না।

প্রশ্ন-৯: অনুপমের বিয়েতে মামা কেন সেকরাকে সঙ্গে এনেছিলেন?
উত্তর: শম্ভুনাথ সেনের মুখের কথার উপর নির্ভর করতে পারেননি বলে মামা অনুপমের বিয়েতে গয়না পরীক্ষার জন্য সেকরাকে সঙ্গে এনেছিলেন। মামার লক্ষ্য ছিল, তিনি কোনোমতেই কারও কাছে ঠকবেন না । তাই বিয়েতে আগেই পণের কথা পাকাপাকি করে ফেলেছিলেন। কনের বাবা গহনায় ফাঁকি দিতে পারেন এমন সন্দেহ মামার ধারনায় ছিল আবার বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর এর প্রতিকার সম্ভব নয়। আর তাই তিনি অনুপমের বিয়েতে সেকরাকে সঙ্গে এনেছিলেন।